স্কুলছাত্রী ইলহামের খুনি কি সেই রাজু মামা?

চট্টগ্রামে বাসার মধ্যে স্কুলছাত্রী ইলহাম বিনতে নাছির (১২) খুনের ঘটনায় চট্টগ্রাম জজকোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী রিয়াজুল কবির রাজু প্রকাশ রাজু মামাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার দিনগত রাতে কথিত সেই রাজু মামাকে গ্রেফতার করা হলেও তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে শুক্রবার বিকাল ৩টায়। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ-সিএমপি বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রণব কুমার চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সিএমপি বাকলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ইলহামের নানা নাছির উদ্দিন।

গ্রেফতার হওয়া রিয়াজুল কবির রাজু প্রকাশ রাজু মামা খুন হওয়া ইলহামের ছোট চাচির ছোট ভাই। তিনি সাতকানিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর শিকু আরা বেগমের ছেলে এবং চট্টগ্রাম জেলা আদালতের শিক্ষানবিশ আইনজীবী।

গত বুধবার নগরের বাকলিয়া থানার সৈয়দ শাহ রোডে ল্যান্ডমার্ক আবাসিক এলাকাসর লায়লা ভবনের নিজেদের বাসা থেকে ইলহামকে উদ্ধার করা হয়। নিহত ইলহাম নগরের মেরন সান স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা মোহাম্মদ নাছির সৌদি আরবে থাকেন। কন্যার খুনের খবর শুনে শুক্রবার বিকালে তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছেন।

পুলিশ ও নিহতের স্বজরা জানান, মোহাম্মদ নাছির ও নাসরিন আকতার খুশবু দম্পতির তিন কন্যার মধ্যে ইলহাম সবার বড়। লায়লা ভবনের ষষ্ঠ তলায় তিন কক্ষের বাসায় তিন মেয়ে ও শাশুড়িকে নিয়ে থাকতেন খুশবু।

গত ঈদে সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পর এখনো ফেরেননি তার শাশুড়ি। এরমধ্যে গত বুধবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে মেজো কন্যাকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যান মা খুশবু।

ওই সময় ঘরে বড় কন্যা ইলহাম ছিল পড়ার টেবিলে আর ছোট কন্যা ইনাজ (বয়স আড়াই বছর) ছিল মায়ের কক্ষে ঘুমে। সকাল ৯টায় বাসায় ফিরে ঘরের দরজা চাপানো অবস্থায় পান তিনি। পরে ইলহামের কক্ষে গিয়ে দেখতে পান বালিশ চাপা অবস্থায় শোয়ানো। অনেক ডাকাডাকি পর বালিশ তুলে মা খুশবু দেখেন মেয়ে রক্তে ভেসে যাচ্ছে।

এরপর তার আর্ত-চিৎকারে পাশের বাসা থেকে ছুটে এসে ইলহামের গলাটাকা মৃতদেহ কোলে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান রাজু মামা।

এদিকে কন্যার গলাকাটা লাশ দেখে আহাজারি করতে করতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মা খুশবু। এতে তার বাম হাত কিছুটা কেটে যায়। খবর পেয়ে বাকলিয়া থানা পুলিশ, সিআইডি, পিবিআই ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

তবে কারা, কেন ইলহামকে খুন করেছে সে বিষয়ে এখনো অন্ধকারে পুলিশ। পুলিশের ধারণা- পারিবারের ভেতরে বা বাহিরের কেউ খুন করেছে ইলহামকে। ডাকাতির সময় খুন হয়েছে কিনা সেটাও নজরে রেখেছে পুলিশ।

সূত্র: পরিবর্তন.কম